লিখেছেনঃ নুশরাত ইউসুফ, প্রিন্সিপাল, অক্সফোর্ড ব্রিজ স্কুল
প্রতিটি শিশুই হচ্ছে আগামীর ভবিষ্যৎ। তাই তার শিক্ষা জীবন শুরু হওয়া উচিত সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে। শিশুর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় তার পরিবারের কাছ থেকে। বিশেষ করে মায়ের কাছ থেকেই শিশুর লেখাপড়ার হাতেখড়ি শুরু হয়ে থাকে। তবে পড়ালেখা শেখার শুরুতে কোন কোন শিশুকে নিয়ে নানা রকমের ঝামেলা পোহাতে হয় বাবা-মায়েদের। যেহেতু শিশু অবস্থায় থাকে তাই তারা মনোযোগী হতে চায় না বা আগ্রহ বোধ করে না। ফলে কখনো কখনো কোনো কোনো বাবা-মা হতাশ হয়ে পড়েন।
অনেক মা-বাবাই আছেন যাদের শিশুর লেখাপড়া শুরু করার সময় হয়ে গিয়েছে। অনেকেই শুরুতে একটু দ্বিধাদ্বন্দে থাকেন কিভাবে শুরু করবেন, কোন বিষয় দিয়ে শুরু করবেন, লিখা কিভাবে শেখাবেন,কোন সিলেবাস follow করবেন ইত্যাদি বিষয়ে। গতানুগতিক ধারায় আমরা দেখে থাকি স্কুলগুলোতে শিশুদেরকে শুরুতেই সরাসরি বর্ণ, সংখ্যা,ছড়া, ইত্যাদি শেখানো হয়। এতে করে যে সকল শিশুদের আগে থেকে এগুলো সম্পর্কে ধারণা থাকে না তাদের জন্য বুঝে উঠতে সময় লেগে যায় আর বুঝতে না পারলে পড়ালেখার উপর অনাগ্রহ ও ভীতি জন্মাতে থাকে। পরবর্তীতে দেখা যায় নিজেদের আগ্রহে আর পড়ালেখা করতে চায় না।
শিশুকে পড়াশোনা করানোর ব্যাপারে হতাশ না হয়ে কিছুটা কৌশলে কাজ করলে শিশুকে পড়ালেখা খুব সহজেই শেখানো যায়। শিশুদের নিয়ে আমার কাজের অভিজ্ঞতা থেকে তাদের পড়ালেখার হাতেখড়ি ও আগ্রহ তৈরির করার কিছু সহজ কৌশল আমি শেয়ার করছি:
১. পড়ালেখার প্রথমেই শিশুদেরকে বই পুস্তক হাতে ধরিয়ে না দিয়ে তাদের বয়সের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কিছু IQ, Matching, Creative Worksheets Solve করানো যেতে পারে। যেগুলোর মাধ্যমে শিশুরা আগ্রহ ও মজা পাবে এবং প্রতিনিয়ত তাদের মস্তিষ্কের বিকাশ বাড়বে।
২. শিশুদেরকে প্রথমেই লিখতে না দিয়ে pre writing/ Dot joining ( বিন্দুর সাথে বিন্দু মেলানো) practice করা যেতে পারে। এতে করে পেন্সিলের সাথে হাতের সঠিক Balance & Control গড়ে উঠতে সহায়ক হয়।
৩. শিশুদেরকে শুরুতেই সরাসরি বর্ণ, সংখ্যা পড়তে ও লিখতে না দিয়ে প্রথমে আকৃতি (Shape) যেমন বৃত্ত (Circle), ত্রিভুজ (Triangle), চর্তুভুজ (Square) ইত্যাদি শেখালে পরবর্তীতে বাংলা ও ইংরেজি বর্ণ, সংখ্যা শেখা অনেক সহজ হয়ে যায়।
৪. প্রতিদিন নিয়ম করে পড়ালেখার পরে কিছু সৃজনশীল কাজ যেমন ড্রইং, ক্রাফটিং করালে শিশুর নিজে থেকে পড়তে বসার প্রতি আগ্রহ ও পজিটিভ ধারণা জন্মাবে।
৫. অক্ষরের ধারণা ও তার সাথে শব্দ শেখা যখন শুরু হবে তখন একবারে সব মুখস্থ না করিয়ে প্রতিদিন অল্প অল্প করে একটি-দুটি অক্ষর শেখালে তাদের উপর চাপ পড়ে না, আর অক্ষরগুলো যদি ক্রাফটিং এর মাধ্যমে শেখানো যায় তাহলে শিশুরা তাড়াতাড়ি বুঝতে পারে, মনেও রাখতে পারে এবং শেখার প্রতি আগ্রহ ধরে রাখতে পারে।
যারা এই পর্যন্ত পড়ে ভাবছেন এই ধরনের বই কোথায় পাওয়া যেতে পারে তাদের জন্য নিচের অংশটুকু লেখা হয়েছে।
এ ধরণের কিছু বই Goofi থেকে পাবলিশ করা হয় বাংলাদেশে। সেগুলো উপরের প্রতিটি ব্যাপার খেয়াল করে তৈরি করা হয়েছে। বাংলা, ইংরেজি, গনিত, ছবি আঁকা – এই ৪ টি বিষয় যেগুলো মুলত স্কুলে শেখানো হয়, সেগুলোর প্রতিটি সাবজেক্টকে খুবই আকর্ষণীয় এবং সৃজনশীলভাবে শিশুদের শেখানো হয়েছে।
আপনারা যারা এই ধরণের বই খুঁজেছেন তারা সেগুলো Goofi এর ওয়েবসাইট থেকে পাবেন। নিচের লিঙ্কে Goofi এর বিভিন্ন সিরিজের লিঙ্ক একসাথে দেয়া হল। আপনার চাহিদা অনুযায়ী সেগুলো কিনে নিতে পারেন।